দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

কেশবপুরে বান পদ্ধতিতে পটল চাষে বাম্পার ফলন

25

যশোরের কেশবপুরে  নুতন পদ্ধতি  অর্থাৎ মাচা অথবা বান পদ্ধতিতে পটল চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। ( বান অর্থ  একটি উঁচু কাঠামো  মাটি থেকে  কিছু টা উপরে বাঁশ কাঠ দিয়ে তৈরি)  পদ্ধতিতে পটল চাষে খরচ কম, লাভ হয় বেশি।

চলতি বছর বেশি দাম পেয়ে কৃষকরা খুশি। যার কারণে এই পদ্ধতিতে পটল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন এলাকার কৃষকরা। দৈনিক খুলনা পত্রিকার কেশবপুর উপজেলা প্রতিনিধি হারুনার রশীদ বুলবুলের তথ্য চিত্রের ভিত্তিতে জানা গেছে, কেশবপুর উপজেলার আলতাপোল এলাকায় মাড়া পদ্ধতিতে পটল চাষে ঝুঁকে পড়েছেন চাষিরা। পটল একটি প্রধান গ্রীষ্মকালীন সবজি।

উষ্ণ ও আদ্র জলবায়ু ও উর্বর মাটি পটল চাষের জন্য উত্তম। পটল দীর্ঘ মেয়াদী ফসল এবং দামও ভাল পাওয়ায় কৃষকরা দিনদিন এ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। মাঠের চারিদিকে শুধু সবুজ পটল খেত। মাচার উপরে একটির গায়ের উপর আর একটি পটল যেন পদ্ম ফুলের মত দাঁড়িয়ে আছে। মাটি থেকে দুই-তিন ফুট উঁচুতে তার ও বাঁশের তৈরি সারি সারি মাচার উপরে নিচে ঝুলছে অসংখ্য পটল।

প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে এসব পটল খেত পরিচর্যায় কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার ভোর হলেই চাষীরা খেত থেকে সপ্তাহে একদিন পটল তুলে বস্তায় ভরে ভ্যান বা অটোযোগে নিয়ে যাচ্ছেন কেশবপুর বাজারসহ আঠার মাইল বাজার, যশোর, খুলনাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের মোকামে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পটলের বাম্পার ফলনের পাশাপাশি দামও বেশি হওয়ায় অর্থনৈতিক মুক্তির পথ খুঁজে পেয়ে কৃষকরা দারুন খুশি। এ দৃশ্য কেশবপুর উপজেলার আলতাপোল চারের মাথার বিস্তৃর্ণ মাঠ জুড়ে বিরাজ করছে।

প্রতি বছর ১৫ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বর মাসে পটল চাষ শুরু হয়। একবার চাষ করলে একাধারে ২/৩ বছর পর্যন্ত রাখা যায়। জীবন কাল বেশি ও রোগ বালাই কম থাকায় কৃষকরা এ চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে অ্যার্থিক ভাবে লাভবান হন।

সরেজমিনে গেলে আলতাপোল এলাকার চাকুরীজীবি জি এম মনিরুজ্জামান বলেন, তিনি চলতি মৌসুমে ১২ শতক জমিতে পটলের আবাদ করেছেন। পটল একটি দীর্ঘ মেয়াদী ফসল। আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। এ কারণে তার এলাকার কৃষকরা পটল চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। ভালো ফলন হওয়ায় তিনি এ পর্যন্ত এক লাখ টাকার পটল বিক্রি করেছেন। তার মতো এলাকার কৃষক আব্দুর  রহমান ১০ শতক, বারেক। হোসেন ২২ শতক, মজিবুর রহমান ১০ শতক,সেলিম রেজা  ১০ শতক ও ফরিদ মোড়ল ৮ শতক জমিসহ এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়ির কৃষকরা মাঠে পটল আবাদ করেছেন।

এ বছর বৃষ্টির পরিমান কোনো ক্ষতি না হওয়ায় গাছ যেমন সবুজ ও সতেজ, তেমন ফলন ও বাম্পার হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে শতকে ২০ থেকে ২৫ কেজি পটল তোলা যাচ্ছে। বন্যার কারণে এবার পটলের বাজার দামও বেশি। তাদের এলাকার অনেক ছাত্র এখন পটল আবাদ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। কেশবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি জমিতে পটল আবাদ হয়েছে। ওই এলাকার মাটি সবজি চাষের উপযোগী।

কৃষকদের লাভবান করতে বিভিন্ন দিক নির্দেশনাসহ সর্বাত্বক তাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে। আলতাপোল এলাকায় কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অনাথ বন্ধু দাস কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। পটল আবাদে খরচ কম লাভ বেশি হয়ে থাকে। যে কারণে দিন দিন ওই এলাকার কৃষক পটল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.