দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

একসঙ্গে কাজ করছে সরকার ও সেনাবাহিনী

করিডোর ইস্যু

66

করিডোর ইস্যুতে সরকার ও সেনাবাহিনী একসঙ্গে কাজ করছে বলে জানিয়েছে সেনাসদর। সোমবার (২৬ মে) সেনানিবাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশন্সের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উল-দৌলা।

প্রেস ব্রিফিংয়ে করিডোর নিয়ে সেনাবাহিনীর অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি বিষয়। দেশ আমাদের সবার। সার্বভৌমত্ব ও স্বার্থ রক্ষায় সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এটি নিয়ে যেভাবে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে, বিষয়টি এখনও ততদূর গড়ায়নি। সরকার ও সেনাবাহিনী অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে পরস্পরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রতিনিয়ত সরকারের সঙ্গে কাজ করছি, সরকারের নির্দেশেই দায়িত্ব পালন করছি। বর্ডারে আরসার মুভমেন্টের সঙ্গে করিডোর ইস্যুর কোনো সংযুক্তি নেই। এই দুটি বিষয় ভিন্ন এবং আলাদাভাবে বিবেচ্য। সরকার ও সেনাবাহিনী আলাদাভাবে ভাবছে—এমনটি মনে করার সুযোগ নেই। আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি, ভবিষ্যতেও করব।”

চট্টগ্রামের একটি কারখানায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর জন্য তৈরি ৩০ হাজার ইউনিফর্ম পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “সংবাদটি বস্তুনিষ্ঠ। কেএনএফ মূলত বম কমিউনিটি নির্ভর একটি সংগঠন, যাদের অস্ত্র ব্যবহারের নজির আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে দেখেছি। তাদের হামলায় আমাদের কয়েকজন সেনা সদস্য নিহত ও আহত হয়েছেন। ফলে ৩০ হাজার ইউনিফর্ম পাওয়া মোটেই ভালো বার্তা নয়।”

তিনি বলেন, “ইউনিফর্মগুলো কারা ব্যবহার করত, তা আমরা অনুসন্ধান করছি। বম কমিউনিটির জনসংখ্যা মাত্র ১২ হাজার। তাহলে ৩০ হাজার ইউনিফর্ম তৈরি করা হয়েছিল কার উদ্দেশ্যে? বিষয়টি গভীরভাবে দেখা হচ্ছে। দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত বিষয়টিকে আমরা গুরুত্বসহকারে নিয়েছি এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”

প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়েও বিস্তারিত তুলে ধরেন এই সেনা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ছায়াযুদ্ধের মধ্যে আছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে শোনা যাচ্ছে। আরসা সদস্যরা বাংলাদেশে ঢুকে অপহরণসহ নানা কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ভারী অস্ত্র থাকার কথাও শোনা যাচ্ছে। এসবের প্রেক্ষাপটে অনেকে জানতে চায়, আমাদের সীমান্ত কি নিয়ন্ত্রণে আছে?”

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজিম-উল-দৌলা জবাব দেন, “অবশ্যই আমরা সীমান্ত রক্ষা করছি। যতক্ষণ শরীরে শক্তি থাকবে, ততক্ষণ আমরা সীমান্ত নিয়ে আপস করব না। এ দেশ আমাদের সবার, একে রক্ষার দায়িত্বও আমাদের সবার।”

তিনি বলেন, “মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি জটিল। সে দেশের সরকার কার্যত বিলুপ্তপ্রায়, রাখাইন রাজ্যের ৮৫-৯০ শতাংশ আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। এই আর্মি কোনো স্বীকৃত সংগঠন নয়। এমন একটি অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠীর চলাফেরা অস্বাভাবিক নয়, তবে এটাকে কখনোই স্বাভাবিক বলা যাবে না।”

তিনি আরও যোগ করেন, “বিজিবি ও সেনাবাহিনী সমন্বিতভাবে সীমান্তে নজরদারি করছে। সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সীমান্তে এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে দেওয়া হবে না, যা দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে। তবে হ্যাঁ, বর্তমান চলমান মুভমেন্টটি উদ্বেগজনক এবং তা কোনোভাবেই কাম্য নয়।”

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.