সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: দারিদ্র্য এবং কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত মায়ের করুণ পরিস্থিতির কারণে উচ্চশিক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়া সাতক্ষীরার মেধাবী ছাত্রী রত্না খাতুনের ভর্তির সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিল সাতক্ষীরা শহর ছাত্রদল। অর্থাভাবে সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজে ভর্তি হতে না পারা এই শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়িয়ে মানবিকতার নজির স্থাপন করল দলটি।
দ্বিতীয় রিলিজ স্লিপে রত্না সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজে ইসলামের ইতিহাস বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেলেও, সামান্য টাকার অভাবে তার স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। বিষয়টি নজরে আসার পর সাতক্ষীরা ছাত্রদল মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে শহর ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো. শাহিন ইসলামের নেতৃত্বে ছাত্রদল নেতারা রত্নাকে সঙ্গে নিয়ে সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজে যান এবং ভর্তির যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দিবা নৈশ কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব তামিম রশিদ, শহর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মহিউদ্দিন কোরাইশ, সদর থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য সাইফুল ইসলাম, ছাত্রনেতা সোহান, সরকারি মহিলা কলেজ সাধারণ শিক্ষার্থী মিম সুলতানাসহ আরও অনেকে। তাঁরা রত্নার হাতে ভর্তির সম্পূর্ণ ফি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তুলে দেন।
ভর্তি শেষে শহর ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো. শাহিন ইসলাম বলেন, “রত্নার মতো একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণে পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা কেবল ভর্তির খরচ নয়, তার উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও সাধ্যমতো সহযোগিতা অব্যাহত রাখব।”
ভর্তি হতে পেরে রত্না আবেগাপ্লুত কণ্ঠে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “আমার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। ছাত্রদলের ভাইয়েরা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমি লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হতে চাই।”
রত্না সাতক্ষীরা দ্যাপোল স্টার পৌর হাই স্কুল থেকে এসএসসি এবং সফুরন্নেসা মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন। অনার্স ভর্তি পরীক্ষার অংশগ্রহণ করে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেলেও টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারিনি।
সম্প্রতি দ্বিতীয় রিলিজ স্লিপে ইসলামের ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান তিনি। কিন্তু অর্থাভাবে ভর্তি হতে না পারায় শিক্ষাজীবন ঝুঁকির মুখে পড়ে।
রত্নার মা রহিমা বেগম কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত। এই রোগে তাঁর হাতের দশটি ও পায়ের তিনটি আঙুল নষ্ট হয়ে গেছে। অসুস্থ শরীর নিয়েও তিনি হাঁস-মুরগি পালন ও মানুষের সহায়তায় কোনোমতে সংসার চালান। স্বামী বহু আগেই পরিবার ছেড়ে চলে গেছেন।